কোভিড ১৯-এর ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন শেষে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে মানুষ। ঈদে কয়েক দিন বিরতি দিয়ে টানা চার মাস ধরে বিধিনিষেধে ছিল দেশ। স্থবির হয়ে পড়েছিল জনজীবন। অবশেষে অচলায়তন ভেঙে বুধবার থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে জনজীবন। বাস, ট্রেন, লঞ্চ চলাচলের পাশাপাশি খুলেছে দোকানপাট-বিপণিবিতান, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস।
বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কর্মজীবী মানুষের স্বাভাবিক ব্যস্ততা দেখা যায়। রাস্তাঘাট ও অলিগলিতে দোকানপাট খুলেছে। সিটভর্তি যাত্রী নিয়ে চলছে গণপরিবহণ। কোনো কোনো পরিবহণে অবশ্য সিটের বেশি যাত্রী তুলতেও দেখা গেছে। আগের ভাড়ায় চলছে বাস।
বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিধিনেষেধের আগে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রাজধানীতে তুলনামূলক কমসংখ্যক বাস চলাচল করছে। তবে একই রুটের আরেকটি বাসের সঙ্গে পাল্লাপাল্লি নিয়ে সড়কে চলছে প্রতিযোগিতা। আবার নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে অর্ধেকসংখ্যক বাস চলাচল করায় সকালে গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া সড়কে ব্যাপকসংখ্যক সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলাচল করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর আবদুল্লাহপুর এলাকায় কথা হয় সায়েম শরিফ নামে নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বিধিনিষিধের মধ্যে বেশ কিছু চাকরিজীবীর হোম অফিস ছিল। যাদের সশরীরে অফিস করতে হয়েছে তারা বিভিন্নভাবে অফিসে পৌঁছেছে। কিন্তু আজ থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার কারণে সবাই অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল বের হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহণ অর্ধেক চালুর কারণে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
 
বিমানবন্দর এলাকায় কথা হয় রাব্বি নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বহুদিন পর বাসার বাইরে এসেছি। ব্যবসা-বাণিজ্য সব বন্ধ। দোকানের পণ্য কিনতে নিউমার্কেট যাচ্ছি।
 
মোহাম্মদপুর থেকে চট্টগ্রাম রোডে চলাচলকারী রজনীগন্ধা বাসের সুপারভাইজার আরমানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, অনেক দিন পর লকডাউন খুলেছে। রাস্তায় যাত্রী কম। লকডাউনের কারণে মানুষ গ্রাম থেকে এখনও ঢাকায় আসতে পারেনি। প্রথম কিছু দিন পর মানুষ ঢাকা আসবে।
 
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছে আরমান। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও দুই-চার দিন সময় লাগবে বলেও মনে করেন তিনি।
 
গণপরিবহণের পাশাপাশি সকাল থেকেই দোকানপাট, শপিংমল, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও অফিস খোলা দেখা গেছে। তবে এসব স্থানে ক্রেতার উপস্থিত নেই বলেই চলে।